গড়িয়াহাট শিল্পকর্তা খুনের তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে তদন্তকারীদের হাতে। পুলিশ বেশ কয়েকজন যুবকের নাম জানতে পেরেছে অভিযুক্ত মিঠু হালদারকে জেরা করে। পাথরপ্রতিমা থেকে বৃহস্পতিবার মাঝ রাতে জাহির গাজি ও বাপি দাস নামে ২ জনকে আটক করা হয়েছে। কিন্ত তারা আদৌ ওই খুনের সঙ্গে জড়িত কিনা তার এখনও কোনো তথ্য পাননি পুলিশ। শুধু জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই তাদের আটক করা হয়েছে।
অপরদিকে পুলিশ হতবাক হয়ে যায় এটা জেনে যে, খুনের পর মিঠু হালদারের ছেলে ভিকি হালদার সারারাত ধরে ডিউটি করে। অন্যদিকে ভিকির মা মিঠু হালদার যে এই খুনের মাস্টারমাইন্ড সে লকআপে বসে বৃহস্পতিবার নিশ্চিন্তে চা খান। তার চোখে মুখে কোনো অনুতাপের চিহ্ন দেখতে পান না লালবাজার থানার গোয়েন্দারা।
খুনের পর গোয়েন্দারা বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন দুষ্কৃতীদের পালানোর রুট সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে। সূত্রের খবর, গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডের বাড়িতে কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলকে খুনের পর ভিকির টি-শার্টে রক্তের দাগ লেগে যায়। রক্তমাখা টি-শার্টটি বাড়ির মধ্যে পরিবর্তন করে নেয়। একটি নাইলনের ব্যাগে রক্তমাখা জামাটি ভরে নেয়। ভিকির মা মিঠু যখন রক্তমাখা জামাটি ধুচ্ছিল ঠিক তখনই বাড়ির মালকিনের কাছে ধরা পড়ে যায়। পরে আরও দু’টি জামা বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়।মালকিন পম্পা গায়েনের থেকে জানা যায়, একটি কাটারিও উদ্ধার করা হয়েছে ঘর থেকে। এবং সেটা পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
একটি সিসিটিভিতে দেখা গিয়েছে, খুনের পর পাঁচজন অভিযুক্তকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে। কিন্ত কাছাকাছি তিনটে সিসিটিভি ক্যামেরা খারাপ ছিল। কিন্ত পুলিশরা অনেক খোঁজ করে জানতে পেরেছে অভিযুক্তরা প্রথমে বালিগঞ্জ স্টেশনে যায়। তিনজন সেখান থেকে গড়িয়াহাট যায় ও দুজন কসবার দিকে চলে যায়। গোয়েন্দা সূত্ৰে খবর, ভিকির রবিবার নাইট ডিউটি ছিল। অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও সে ডিউটি যায় এবং সোমবার দুপুর পর্যন্ত ডিউটি করে। এই ঘটনায় তার চোখে মুখে কোনো ভয়ের চাপ নেই। পরে বাড়িতে পৌঁছে মাকে জোড়া খুনের বিবরণ দেয়। খুনের পর ভিকি আর তার মা মিঠু হালদার স্বাভাবিক ছিলেন।
মিঠু তার সময় সুভাষ হালদারকে ছেড়ে ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে ছেলের সঙ্গে থাকতেন। ভিকির বাবা ও কাকা জানায়, সে মেট্রোরেলে ইঞ্জিনিয়ারের পদে চাকরি পেয়েছে। সুভাষ বাবুর থেকে টাকা হাতিয়ে খুন করার চেষ্টা করে ভিকি, ভাই বিশাল, ও মা মিঠু। সেটির মামলা এখনও চলছে। কিন্ত তার মধ্যেই এই খুন । পুলিশ সূত্রে খবর, সুবীর চাকি ও রবীন মণ্ডলকে খুন করে ভিকি সঙ্গীদের নিয়ে টাকা লুঠপাট করে ওই মামলা চালানোর জন্য। পুলিশ এর তদন্ত করছে।